দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। লড়াই শুরুর পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এবং হাজারও মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও সংঘাত অবসানের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় চীন রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের ব্যবস্থা করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। সংকট সমাধানে সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধান করা দরকার বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে উদ্ধৃত করে বার্তাসংস্থা আরআইএ বলেছে, চীন একটি শান্তি সম্মেলনের ব্যবস্থা করতে পারে যেখানে রাশিয়া এবং ইউক্রেন অংশ নেবে।
ল্যাভরভ বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ হবে ইউক্রেনের সংকট সমাধানে বেইজিংয়ের চলমান প্রচেষ্টারই ধারাবাহিকতা।
বার্তাসংস্থাটির সাথে এক সাক্ষাৎকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা (চীনের) অবস্থানের সঙ্গে একমত যে, সংঘাতের মূল কারণগুলোকেই প্রথমে সমাধান করতে হবে এবং পরবর্তীতে চুক্তির সময় সমান এবং অবিভাজ্য নিরাপত্তা নীতির ভিত্তিতে সকল পক্ষের বৈধ স্বার্থকে রক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে আবার উল্লেখ করতে দিন, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এগোতে হবে, যা সেখানে বসবাসকারী মানুষের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। এরপর একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে মস্কো।
মূলত কয়েক দফা ‘কথিত’ গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের ওই চারটি অঞ্চল অধিগ্রহণ করে রাশিয়া। ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এবং ভয়প্রীতি প্রদর্শন করে ভোট দিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।
গণভোটের পর ওই চার অঞ্চলের প্রক্সি সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে সেগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে যুক্ত করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন সংকট নিরসনের জন্য রাশিয়া বারবার আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দখলে নেওয়া চার অঞ্চলকে কিয়েভ এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে রুশ ভূখণ্ডের অংশ বলে স্বীকৃতি দিতে হবে বলে পূর্বশর্ত দিয়েছে মস্কো। যদিও ইউক্রেন সেসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনাও করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটন ‘কিয়েভ সরকারের অপরাধের সহযোগী’ হয়ে উঠেছে।
এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও যুক্তরাষ্ট্র ‘সংঘাতের আগুন জ্বালাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।