ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোটে বাধা দেওয়ায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে কেন্দ্রের ভোটগ্রহণের দ্বায়িত্বে কর্মরত কর্মকর্তাদের সরকারি বরাদ্দের ৭৩ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর আহম্মেদের বিরুদ্ধে।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে গতকাল বুধবার (২৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিদপুরা দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ওই কেন্দ্রের দ্বায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাসিব উদ্দিন মৃধা বলেন, ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্তে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর আলী একদল সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে কেন্দ্র দখলের জন্য ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। কেন্দ্রে ঢুকেই তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী কাউসার ভূঁইয়ার দোয়াত-কলম প্রতীকের জন্য ভোট কাটতে চান। এটা করতে না দেওয়ায় ওই ইউপি চেয়ারম্যান আমার ওপর চটে গিয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করে ভোটকেন্দ্র পরিচালনার জন্য রক্ষিত ৭৩ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান।
অভিযোগ সম্পর্কে জনতে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টায় ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর আহম্মেদের মোবাইল ফোনে কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আহাম্মেদ ঘারুয়া ইউনিয়নের খামিনারবাগ গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হকের ছেলে। আওয়ামী লীগে তার কোনো পদ পদবী নেই। দীর্ঘ ১০ বছর সৌদি আরবে প্রবাসজীবন কাটিয়ে দুই বছর আগে এলাকায় এসে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সনের সমর্থক। গতকাল তিনি মজিবুর রহমান নিক্সনের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাউসার ভূঁইয়ার দোয়াত-কলম প্রতীকের জন্য ভোট কেন্দ্রে যান। কাওসার ভূঁইয়া এই নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোখলেসুর রহমানকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন।
তৃতীয় ধাপে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দ্বায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক খান। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে কথা বলেছি। এ ব্যাপারে আজ দুপুরে ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, ভোটগ্রহণের মতো এমন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্বে কর্মরত একজন কর্মকর্তার সঙ্গে একজন ইউপি চেয়ারম্যানের এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া সরকারি টাকা লুটের বিষয়টিও ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যায় না। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সোচ্চার রয়েছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে তার অপরাধের মাশুল দিতে হবে।
ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, ঘটনাটি আমি গতকালই মৌখিকভাবে জেনেছি। তবে এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।