সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে গুঁড়িয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। পুরো আইপিএলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে ফাইনালে এসে খেই হারায় হায়দরাবাদের ব্যাটাররা।
রাসেল-স্টার্কদের আগুনে বোলিংয়ে ১১৩ রানেই অলআউট হয় প্যাট কামিন্সের দল। জবাবে ৫৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল শ্রেয়াস আইয়ারের দল। ১০ বছর পর এটি তাদের তৃতীয় শিরোপা। এর আগে ২০১২ ও ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই নারিনকে হারায় কলকাতা। শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ভেঙ্কাটেশ আইয়ার। গুরবাজ ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাট করতে থাকলেও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন ভেঙ্কাটেশ। স্রেফ ৪৫ বলে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলকে তারা নিয়ে যান জয়ের কাছাকাছি।
নবম ওভারে শাহবাজের বলে এলবিডব্লিউ হন গুরবাজ। ৩২ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। একটু পর ২৪ বলে ফিফটির দেখা পান ভেঙ্কাটেশ। আর নিশ্চিত করেন দলের জয়ও। ২৬ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৩ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়াস আইয়ার।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে যেন বড়সড় ধাক্কা খায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। শুরুতেই স্টার্কের আগুনে বোলিংয়ের শিকার হন অভিষেক শর্মা (২)। ঠিক তার পরে ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই ট্র্যাভিস হেডকে সাজঘরে পাঠান ভাইভাভ আরোরা। ইনিংসের ৫ম ওভারে আবার স্টার্কের আঘাত। ১৩ বলে ৯ করে ফেরেন আগের ম্যাচের নায়ক রাহুল ত্রিপাঠি।
হায়দরাবাদে শিবিরে চতুর্থ আঘাত হানেন কলকাতার হর্ষিত। তার বলে খোঁচা দিয়ে ১৩ রানে সাজঘরে ফিরলেন নীতিশ রেড্ডি। এরপর কিছুটা ধীরে খেলেন ক্লাসেন এবং মার্করাম। তবে কলকাতার বোলিং তোপে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি এই জুটি। দলীয় ৬২ রানে মার্করামকে স্টার্কের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান আন্দ্রে রাসেল। ২৩ বলে ২০ রান করেন মার্করাম।
হায়দরাবাদ এরপর আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ৮ রানে শাহবাজ, ৪ রানে আব্দুল সামাদকে হারায় তারা। দলীয় ৯০ রানে হায়দরাবাদের ভরসা ক্লাসেনকে বোল্ড করেন হর্ষিত। ১৭ বলে ১৬ রান করেন তিনি।
একসময় দলীয় ১০০ পার হওয়া নিয়েই শঙ্কায় পড়ে যায় হায়দরাবাদ। সেখান থেকে তাদের পথ দেখান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। জয়দেব উনাদকাটকে নিয়ে পার করেন দলীয় শতরান। তাদের জুটি থেকে এসেছিল ২৩ রান। এরপর উনাদকাটের পর ফিরে যান প্যাট কামিন্সও (২৪)। রাসেলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন অজি এই অলরাউন্ডার। তাতেই ১৮.৩ ওভারে অলআউট হয়ে ১১৩ রানে শেষ হায়দরাবাদের ইনিংস।
এমন হতশ্রী ব্যাটিং প্রদর্শনীর দিনে লজ্জার এক রেকর্ডও গড়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএলের ফাইনালে এটিই যেকোনো দলের জন্য সর্বনিম্ন স্কোর। ২০১৩ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ১৪৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১২৫ রানে আউট হয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। সেটা হয়েছিল কলকাতার মাঠে। আর আজ চেন্নাইয়ের মাঠে এমন লজ্জা পেল ড্যানিয়েল ভেট্টোরির শিষ্যরা।
কলকাতার পক্ষে আন্দ্রে রাসেল শিকার করেন তিনটি উইকেট। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান মিচেল স্টার্ক ও হর্ষিত রানা, একটি করে উইকেট শিকার করেন ভাইভাভ আরোরা, সুনীল নারিন ও বরুণ চক্রবর্তী।